ঋতুচক্রে হেমন্ত বিরাজিত হলেও প্রকৃতিতে লেগেছে শীতের আগমনী ছোঁয়া। প্রকৃতি জানান দিতে শুরু করে দিয়েছে যে, শীত আসতে আর দেরী নেই। ঋতু বৈচিত্র্যে শীতকাল অনেকটাই ভিন্ন। আবহাওয়াজনিত কারণে এই সময় ত্বক অন্য সময়ের তুলনায় একটু বেশিই রুক্ষ হয়ে যায়। তাই চেহারা দেখায় শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল। অনেকেই বলেন, শীতে তাদের ত্বকে কিছুটা কালো ছোঁপ পড়ে যায়। তাই শীতকালে ত্বকের বাড়তি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। এই বাড়তি যত্নে শীতকালে অল্প কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই ত্বক উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। আর ত্বকে তারুণ্য বজায় থাকবে।
সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার : নারী-পুরুষ প্রত্যেকের জন্যই ত্বক পরিষ্কার রাখা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক অত্যধিক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই শীতের আগে দরকার একটি ভালো মানের ক্লিনজার ব্যবহার করা। এরপর শীতকালে উজ্জ্বল ত্বক পেতে এখন থেকেই ময়েশ্চারাইজিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ময়েশ্চারাইজার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখে। শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় ত্বক শুকিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে এবং বাড়তি ক্ষতি এড়াতে হাইড্রেটিং ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
একটি ভারী ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করুন : ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে ত্বকের যত্নের পরিবর্তন বাধ্যতামূলক। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রার পরিবর্তন হয়। যে বাতাস থেকে ত্বক শ্বাস নিচ্ছে, সেই বাতাসের আর্দ্রতা পরিবর্তন হয়। এই আর্দ্রতার কারণে গ্রীষ্মে হালকা জেলভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু শীতকালে এমন একটি ময়েশ্চারাইজার বাছাই করা উচিত; যাতে ভিটামিন ই ও হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো উপাদানগুলো থাকে। এছাড়া নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, বাটারমিল্ক ও শসার মতো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেওয়া যেতে পারে।
এসপিএফ যুক্ত ভালো সানস্ক্রিন ব্যবহার :
অনেক সময়ই কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে শীতকালে সূর্য দৃশ্যমান হয় না। তবুও নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। কারণ মানবদেহের ত্বক শীতেও সূর্যের রশ্মিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে ত্বকে পিগমেন্টেশন, সানস্পট ও ত্বকের আরও কিছু সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সানস্ক্রিন ব্যবহার মেকআপকে সৌন্দর্যের সঙ্গে সূর্যের রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেবে।
ত্বককে সুরক্ষিত রাখবে এক্সফোলিয়েট :
মানবদেহের ত্বকের বাইরের স্তর থেকে মৃত ত্বকের কোষ অপসারণের প্রক্রিয়াই হলো এক্সফোলিয়েশন। এটা ময়লার স্তর অপসারণ করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত পণ্যগুলো ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে দেয়। যদি সঠিকভাবে এটি না করা হয়, তবে এটি উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে। তাই ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে অবশ্যই একটি নিরাপদ পদ্ধতি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যাতে এটি ত্বকের ক্ষতি না করে এবং লালভাব বা ব্রণ কমাতে পারে।
ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে বডি বাটার ব্যবহার :
সুপার ড্রাই ত্বকে যদি একটু পর পরই ময়েশ্চারাইজ করতে হয়, তাহলে এর জন্যে ভালো সমাধান হচ্ছে বডি বাটার ব্যবহার। বডি বাটার ত্বকের প্রতিরোধক স্তর হিসেবে কাজ করবে। আর এটা দিনভর ত্বককে ময়েশ্চারাইজড, ডিউয়ি আর সফট রাখতে সাহায্য করে। এটা শুধু ত্বকের উপরিভাগই না, ত্বকের গভীরে পৌঁছেও কাজ করে। এক কথায়, এটা দীর্ঘ সময় ধরে ময়েশ্চার লক রাখে।