নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আয়োজনের ঘোষণা করেন।
তারুণ্যের উৎসবের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে এবারের বিপিএল দিয়ে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর শুরু বিপিএলের নতুন আসর।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়সহ ১২টির বেশি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রায় দুই মাস ধরে চলবে এই তারুণ্যের উৎসব।
ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস ও বাস্কেটবলের নানা আয়োজন থাকছে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হতে যাওয়া এই তারুণ্যের উৎসবে। গত জুলাই-অগাস্টের গণ-অভ্যুত্থানের ছাপ থাকবে এই আয়োজনের পরতে পরতে।
তারুণ্যের উৎসবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামানের স্বাগত বক্তব্য শেষে বড় পর্দায় প্রদর্শিত হয় জুলাই-অগাস্টের গণ্য অভ্যুত্থানের মর্মস্পর্শী প্রামাণ্যচিত্র। পরে আন্দোলনে প্রাণ হারানোদের স্মরণে পালন করা হয় ১ মিনিটের নীরবতা।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে একদম শেষে উন্মোচন করা হয় বিপিএলের ১১তম আসরের মাসকট ও থিম সং। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আগের দশ আসরে ছিল না কোনো মাসকট।
নতুন আসরে গত জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতিকে ধরে রাখতে মাসকটের নাম রাখা হয়েছে ‘ডানা ৩৬।’ যা মূলত ডানা প্রসারিত করা একটি সাদা পায়রা।
মাসকটের নামের ডানা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে। গত জুলাই-অগাস্টের গণ আন্দোলনের স্মরণীয় ৩৬ দিনের জন্য মাসকটের দুই পাশে ১৮টি করে রাখা হয়েছে মোট ৩৬টি রঙিন পালক। যা প্রতিটি স্বপ্নবাজ, উদ্যমী, অপ্রতিরোধ্য তরুণকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রথমবারের মতো মাসকট ব্যবহারের পাশাপাশি থিম সংও তৈরি করা হয়েছে বিপিএলের জন্য। বিসিবি সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক প্রদত্ত মূল শব্দমালা ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানকে ধারণ করে তৈরি করা হয়েছে সেই থিম সং। তারুণ্যের উৎসবের প্রতিপাদ্যও এই স্লোগান।
বিপিএলে এবার আসরজুড়েই থাকছে জুলাই-অগাস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ছাপ। মাঠে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের জন্য থাকবে বিনামুল্যে পানির ব্যবস্থা। আন্দোলনে প্রাণ দেওয়া মীর মুগ্ধের নামে ‘শহীদ মুগ্ধ কর্নার’ থেকে বিনামূল্যে পানি পান করতে পারবেন দর্শকরা। সেখানে থাকা কিউ আর কোডের মাধ্যমে জুলাই ফাউন্ডেশনে অনুদানও দিতে পারবেন ইচ্ছুক যে কেউ।
এছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ ও রিসাইক্লিংয়ের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিটি ভেন্যুতে থাকবে বর্জ্য-শূন্য জোন। যেখানে প্রচার করা হবে বর্জ্য-শূন্যতার উপকারিতা। পাশাপাশি দর্শকদের ভোগান্তি কমাতে বিপিএলের সব টিকেট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করার চেষ্টাও করছে বিসিবি।
ক্রিকেটপ্রেমীদের পাশাপাশি সারা দেশের আপামর মানুষের মাঝে তারুণ্যের উৎসব ছড়িয়ে দিতে বিপিএলের তিন ভেন্যু ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ‘মিউজিক ফেস্ট’ নামে আয়োজন করা হবে তিনটি কনসার্ট। এর বাইরে আরও কিছু চমকের আভাসও দিয়ে রাখেন বিসিবি প্রধান।